Chapter 18
-
বায়ু
ও জল প্রদূষণ
1. 1. কোন
উপায়ে জল দূষিত হতে পারে?
উত্তৰঃ জল দূষণের
কারণগুলি হল:
(ক) নদীতে
গোসল, কাপড়
ধোয়া পানি দূষিত হচ্ছে।
(খ) শিল্প
থেকে নদী, হ্রদ এবং
পুকুরে নির্গত বিষাক্ত রাসায়নিক দ্বারা জল দূষিত হয়।
(গ) কৃষিতে
ব্যবহৃত কীটনাশক ও রাসায়নিক সার দ্বারা পানি দূষিত হয়।
(ঘ) ময়লা-আবর্জনা, মৃতদেহ ইত্যাদি পানিতে ফেলার ফলে
পানি দূষিত হয়।
2. 2. কিভাবে
আপনি ব্যক্তিগতভাবে বায়ু দূষণ কমাতে হবে?
উত্তৰঃ বায়ু
দূষণ কমাতে, আমাদের
নিম্নলিখিতগুলি করতে হবে:
(ক) গাছ
লাগাতে হবে।
(খ) গাড়ির
ব্যবহার যতটা সম্ভব কমাতে হবে।
(গ) আমরা
ডিজেল পেট্রোলের পরিবর্তে সিএনজি এবং আনলেড পেট্রোল ব্যবহার করে বায়ু দূষণ কমাতে
পারি।
(ঘ) জীবাশ্ম
জ্বালানি প্রতিস্থাপনের জন্য বিকল্প জ্বালানি খুঁজতে হবে।
(ঙ) বায়ু
দূষণ সম্পর্কে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
3. 3. 'পরিষ্কার, স্বচ্ছ
(ঝকঝকে) জল পান করা নিরাপদ'
- আপনার মতামত দিন।
উত্তৰঃ এটি 'পরিষ্কার, স্বচ্ছ (ঝকঝকে) পানি পান করার
জন্য উপযোগী' বলে মনে
হয় না কারণ পরিষ্কার, স্বচ্ছ
পানিতে অনেক রোগের জীবাণু, টক্সিন, আয়রন এবং অপ্রয়োজনীয় পদার্থ
থাকতে পারে। তাই এই পানি আমাদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। অতএব, আমরা যে জল পান করি তা পরিষ্কার
এবং স্বচ্ছ হলেও, আমাদের
সর্বদা চিকিত্সার পরে পান করা উচিত।
4. ধরুন
আপনি আপনার শহরের পৌর কর্পোরেশনের সদস্য। আপনার শহরের সমস্ত পরিবারে বিশুদ্ধ জল
সরবরাহ করার জন্য আপনি কী ব্যবস্থা নেবেন তার একটি তালিকা তৈরি করুন৷
উত্তৰঃ বিশুদ্ধ পানি
সরবরাহের জন্য গৃহীত ব্যবস্থাগুলো হলো-
(ক) জল
সরবরাহের পাইপগুলি যাতে নর্দমাগুলির সংস্পর্শে না আসে তা নিশ্চিত করার জন্য যত্ন
নেওয়া উচিত।
(খ) পানির
ট্যাংকগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার রাখতে হবে।
(গ) ক্লোরিন
ট্যাবলেট বা ব্লিচিং পাউডার অবশ্যই সময়মতো পানিতে ব্যবহার করতে হবে।
(ঘ) পানি
সরবরাহের জন্য ব্যবহৃত পাইপে যেন কোনো ছিদ্র না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
(ঙ) পানীয় জল
সরবরাহ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিটি বাড়িতে পানীয় জলের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
5. পরিষ্কার
বায়ু এবং দূষিত বায়ুর মধ্যে পার্থক্য ব্যাখ্যা কর।
উত্তৰঃ আয়তন
অনুসারে বিশুদ্ধ বায়ুর মিশ্রণে 78%
নাইট্রোজেন এবং 21% অক্সিজেন গ্যাস থাকে। এটিতে কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন, আর্গন এবং জলীয় বাষ্পের খুব কম
মাত্রা রয়েছে। বিশুদ্ধ বাতাস মানুষের স্বাস্থ্যকে শক্তিশালী করে।
অন্যদিকে
দূষিত বাতাসে, উপরের বাতাসের
অনুপাত পরিবর্তিত হয়। এই বাতাস স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এই বায়ু
শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি করে। দূষিত বায়ু
হাঁপানি, কফ এবং
অন্যান্য রোগের কারণ হতে পারে।
6. 6. কোন
পরিস্থিতিতে অ্যাসিড বৃষ্টি হতে পারে ব্যাখ্যা কর। কিভাবে এসিড বৃষ্টি আমাদের
ক্ষতি করেছে?
উত্তৰঃ আমাদের
চারপাশের বিভিন্ন ধরনের শিল্প যেমন রাবার শিল্প, স্বয়ংচালিত শিল্প, রাসায়নিক শিল্প ইত্যাদি বায়ু দূষণকারী সালফার ডাই
অক্সাইড এবং নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড প্রভৃতি বায়ু দূষণের মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলে
বায়ু দূষণের পরিমাণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। এই গ্যাসগুলি বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্পের
সাথে রাসায়নিকভাবে বিক্রিয়া করে সালফিউরিক অ্যাসিড এবং নাইট্রিক অ্যাসিড তৈরি
করে। এই অ্যাসিডগুলি বৃষ্টির জলকে অম্লীয় করে তোলে। এ ধরনের বৃষ্টিকে বলা হয়
অ্যাসিড বৃষ্টি
অ্যাসিড
বৃষ্টি আমাদের বিভিন্নভাবে ক্ষতি করে। যেমন-
(ক) অ্যাসিড
বৃষ্টি কৃষি মাটির অম্লতা বাড়ায়, ফলে ফলন কমে যায়।
(খ) অ্যাসিড
বৃষ্টি জলাশয়ে জলের অম্লতা বাড়ায়, যা মাছ ও ব্যাঙের ডিম নষ্ট করে।
(গ) পাতা, ফল ও ফুল দ্রুত ঝরে যায় এবং
কুঁড়ি শুকিয়ে যায়।
(ঘ) অ্যাসিড
বৃষ্টি মার্বেলের ক্ষতি করে যা ভবন এবং প্রাচীন স্মৃতিস্তম্ভগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত
করে।
(ঙ) অ্যাসিড
বৃষ্টি ধাতুর ক্ষয়কারী বিল্ডিং বাড়ায়।
7. 7. নিচের
কোন গ্যাসগুলো গ্রীনহাউস গ্যাস নয়?
(a) কার্বন
ডাই অক্সাইড।
(b) সালফার-ডাই-অক্সাইড।
(গ) মিথেন।
(d) নাইট্রোজেন।
উত্তৰঃ (d) নাইট্রোজেন।
8. 8. আপনার
নিজের ভাষায় 'গ্রিনহাউস
প্রভাব' বর্ণনা
করুন।
উত্তৰঃ আমরা জানি
যে সূর্যের রশ্মি পৃথিবীর পৃষ্ঠকে উষ্ণ রাখে। সূর্যের বিকিরিত রশ্মির একটি অংশ
পৃথিবী দ্বারা শোষিত হয় এবং আরেকটি অংশ মহাকাশে প্রতিফলিত হয়। এই প্রতিফলিত
বিকিরণের একটি অংশ বায়ুমণ্ডল দ্বারা ধরে রাখা হয়, যা বায়ুকে দূষিত করে এবং পৃথিবীকে উষ্ণ রাখে। একে
বলা হয় গ্রিনহাউস ইফেক্ট। এই ঘটনাটি ছাড়া জীবের বেঁচে থাকা অসম্ভব কিন্তু এখন
গ্রিনহাউসে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি এবং বায়ুমণ্ডল দূষণের কারণে এটি
জীবের জন্য হুমকিস্বরূপ।
কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস তাপ শোষণ করে এবং এই তাপকে উপরের দিকে
ছেড়ে দেয় না। ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়ছে। একে বলা হয় গ্লোবাল
ওয়ার্মিং। বৈশ্বিক
উষ্ণায়নের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা অপ্রত্যাশিতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গ্লোবাল
ওয়ার্মিং বৃষ্টিপাত, কৃষিক্ষেত্র, গাছপালা এবং প্রাণীকে প্রভাবিত
করে।
10. 10. তাজমহলের
সৌন্দর্যের জন্য হুমকির বর্ণনা দাও।
উত্তৰঃ বিশেষজ্ঞরা
বলছেন, বায়ু
দূষণ তাজমহলের মার্বেলকে কলঙ্কিত করেছে। বিশেষ করে আগ্রার আশেপাশের বিভিন্ন ধরনের
শিল্প যেমন রাবার শিল্প, স্বয়ংচালিত
শিল্প, রাসায়নিক
শিল্প ইত্যাদি সালফার ডাই অক্সাইড এবং নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইডের মতো বায়ু দূষক
নির্গত করে বায়ুমণ্ডলে বায়ু দূষক বাড়িয়েছে। এই গ্যাসগুলি বায়ুমণ্ডলের জলীয়
বাষ্পের সাথে রাসায়নিকভাবে বিক্রিয়া করে সালফিউরিক অ্যাসিড এবং নাইট্রিক অ্যাসিড
তৈরি করে। এই অ্যাসিডগুলি বৃষ্টির জলকে অ্যাসিড করে এবং অ্যাসিড বৃষ্টির সৃষ্টি
করে। এই অ্যাসিড বৃষ্টি মার্বেলের বিশেষ ক্ষতি করেছে। তাজমহল রক্ষায় সিএনজি এবং
এলপিজির মতো পরিশোধিত গ্যাস ব্যবহার করতে শিল্পকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
এ ছাড়া তাজমহলের সৌন্দর্য নষ্ট হয়েছে চারপাশে চলাচলকারী যানবাহনের কারণে।
11. জলে
পুষ্টির বৃদ্ধি কীভাবে জলজ জীবের বেঁচে থাকার উপর প্রভাব ফেলে তা আলোচনা কর।
উত্তৰঃ কৃষিকাজে
ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থ পানিতে গিয়ে দূষিত করে। এগুলো শৈবালের পুষ্টি হিসেবে
কাজ করে এবং শেওলার পরিমাণ বাড়ায়। এই শেত্তলাগুলি মারা গেলে, তারা ব্যাকটেরিয়া ভাঙতে সাহায্য
করে। এই ব্যাকটেরিয়া পানির অক্সিজেন ব্যবহার করে এবং এটি পানিতে অক্সিজেনের
পরিমাণ কমিয়ে দেয়। পানিতে অক্সিজেনের মাত্রা কম থাকায় পানিতে থাকা জলজ প্রাণী
মারা যেতে পারে। এইভাবে, জলে
পুষ্টির বৃদ্ধি জলজ জীবের বেঁচে থাকাকে প্রভাবিত করে।
অতিরিক্ত
প্রশ্ন:
(ক)
গ্রিনহাউস গ্যাসের নাম বল।
উত্তৰঃ কার্বন
ডাই অক্সাইড, সালফার
ডাই অক্সাইড, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড ইত্যাদি
(খ) জল
দূষণকারী বলতে কী বোঝায়?
উত্তৰঃ বিভিন্ন ক্ষতিকারক পদার্থ যেমন বর্জ্য, বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ, পলি ইত্যাদি পানিতে মিশে তা দূষিত করে। জল দূষিত এই পদার্থগুলিকে জল দূষণকারী বলা হয়।