Chapter 5 -
মনসামঙ্গল
পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন ১: ‘মনসামঙ্গল’ কাব্যটি কার লেখা এবং এর মূল উদ্দেশ্য কী ছিল?
উত্তর: ‘মনসামঙ্গল’ কাব্যটি মধ্যযুগীয় বাংলা মঙ্গলকাব্যের একটি অংশ এবং এটি কবি বিজয় গুপ্তের রচনা। এই কাব্যের মূল উদ্দেশ্য ছিল দেবী মনসার মহিমা ও পূজার গুরুত্ব প্রচার করা এবং সমাজে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা প্রতিষ্ঠা করা।
প্রশ্ন ২: চাঁদ সদাগর মনসাকে পূজা করতে অস্বীকার করলেন কেন?
উত্তর: চাঁদ সদাগর ছিলেন শিবভক্ত এবং তিনি মনসাকে দেবী হিসেবে স্বীকার করতেন না। তিনি মনসাকে নাগদেবী বা নিম্নমার্গীয় দেবী বলে মনে করতেন। এই কারণে তিনি তাঁর পূজা করতে অস্বীকার করেন।
প্রশ্ন ৩: চাঁদ সদাগরের মনসাকে অস্বীকার করার পর কী ঘটেছিল?
উত্তর: চাঁদ সদাগর মনসাকে অস্বীকার করার ফলে মনসা রুষ্ট হন এবং তাঁর জীবন বিপর্যস্ত করে দেন। চাঁদ সদাগরের জাহাজ ডুবে যায়, পুত্র লক্ষ্মীন্দর মারা যায় এবং তাঁর সংসারে বিপর্যয় নেমে আসে।
প্রশ্ন ৪: ‘মনসামঙ্গল’ কাব্যে ধর্ম ও সমাজ জীবনের কী প্রভাব পড়েছে?
উত্তর: ‘মনসামঙ্গল’ কাব্যে ধর্মীয় বিশ্বাস, পৌরাণিক কাহিনি এবং সামাজিক রীতিনীতির গভীর প্রভাব দেখা যায়। কাব্যের মাধ্যমে দেবী মনসার আরাধনা সমাজে প্রতিষ্ঠা পায় এবং ধর্মীয় সহিষ্ণুতা ও ক্ষমাশীলতার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে।
🔹 অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর (Additional Q&A)
প্রশ্ন ৫: ‘মনসামঙ্গল’ কাব্যে দেবী মনসার চরিত্র কেমনভাবে চিত্রিত হয়েছে?
উত্তর: দেবী মনসাকে এখানে একাধারে শক্তিশালী, অভিমানী ও প্রতিশোধপরায়ণ রূপে দেখানো হয়েছে। তিনি তাঁর পূজার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য চাঁদ সদাগরের বিরুদ্ধে নানা বিপর্যয় আনেন, কিন্তু পরে ক্ষমাশীলও হন। তাঁর চরিত্র দ্বৈত—দণ্ডদাত্রী এবং করুণাময়ী।
প্রশ্ন ৬: লক্ষ্মীন্দর চরিত্রটি কেমন?
উত্তর: লক্ষ্মীন্দর চাঁদ সদাগরের একমাত্র পুত্র। তিনি সুন্দর, সাহসী এবং পিতার প্রতি অনুগত ছিলেন। মনসার অভিশাপে তিনি মারা যান, কিন্তু পরে তাঁর স্ত্রী বেহুলার কঠিন তপস্যায় তিনি পুনর্জীবন লাভ করেন।
প্রশ্ন ৭: বেহুলার চরিত্র কীভাবে নারী শক্তির প্রতীক?
উত্তর: যদিও এই অংশে বেহুলার কাহিনি নেই, তবে ‘মনসামঙ্গল’ কাব্যের পরবর্তী অংশে বেহুলা তাঁর মৃত স্বামীকে নিয়ে স্বর্গ পর্যন্ত যাত্রা করে এবং দেবতাদের মন গলিয়ে স্বামীর প্রাণ ফেরান। এতে নারী শক্তি, সাহস, ভালোবাসা ও অটল নিষ্ঠার প্রতিফলন ঘটে।
প্রশ্ন ৮: ‘মনসামঙ্গল’ কাব্যের মাধ্যমে কী নৈতিক শিক্ষা পাওয়া যায়?
উত্তর: এই কাব্য আমাদের শিখায় যে, অহংকার বা একপেশে বিশ্বাস অশান্তির কারণ হতে পারে। সব ধর্ম বা বিশ্বাসকে সম্মান করা উচিত। আর সহনশীলতা, দয়া ও আত্মত্যাগ মানবজীবনের গুরুত্বপূর্ণ মূল্য।
প্রশ্ন ৯: ‘মনসামঙ্গল’ কাব্যকে কেন “মঙ্গলকাব্য” বলা হয়?
উত্তর: ‘মনসামঙ্গল’ একটি মঙ্গলকাব্য কারণ এর মাধ্যমে কোনো দেবতা বা দেবীর মাহাত্ম্য প্রচার করা হয়েছে, যার মাধ্যমে সমাজে কল্যাণ ও মঙ্গল কামনা করা হয়। এই কাব্য দেবী মনসার গুণগান করে, তাই এটি "মঙ্গলকাব্য" নামে পরিচিত।