Chapter 7.1
আমার ময়ূর -
প্রিয়স্বদা দেবী
------- ----- ------- ----- -- -------- ---- ---
1. 'কর্তা-কর্ম-ক্রিয়া'-পদক্রম অনুসারে নীচের
বাক্যগুলিকে আবার লেখো:
1. লিখে গেছে গাঙশালিকে গাঙের পাড়ের মোড়ল হ'তে ?
উত্তর:
গাঙশালিকে গাঙের পাড়ের মোড়ল হতে লিখে গেছে।
2. ইহার সাথে পেলুম আজি খোকা ভাই-এর
একটি চিঠি ?
উত্তর:
ইহার সাথে আজি খোকা ভাই-এর একটি চিঠি পেলুম।
3. সবুজ পাতার আসরগুলি নাচছে জল-ধারায় মেতে ?
উত্তর:
সবুজ পাতার আসরগুলি জল-ধারায় মেতে নাচছে।
4. উদাস বাতাস আছড়ে বলে কে যেন বা
চাইছে কাকে ?
উত্তর:
উদাস বাতাস আছড়ে বলে কে যেন বা কাকে চাইছে।
5. শীতের ভোরের রোদের মতো লেখনখানি লাগছে মিঠি ?
উত্তর:
শীতের ভোরের রোদের মতো লেখনখানি মিঠি লাগছে।
2. নীচের বাক্যগুলিকে ভেঙে দুটি বাক্যে পরিণত করো:
1. চিঠি পেলুম লাল মোরগের ভোর-জাগানোর সুর-ভরা।
উত্তর:
লাল মোরগের চিঠি পেলুম। সেই চিঠি ভোর-জাগানোর সুর-ভরা।
2. সবুজ পাতার আসরগুলি নাচছে জল-ধারায় মেতে।
উত্তর:
সবুজ পাতার আসরগুলি নাচছে। সেগুলি জল-ধারায় মেতেছে।
3. শীতের ভোরের রোদের মতো লেখনখানি
লাগছে মিঠি।
উত্তর:
লেখনখানি শীতের ভোরের রোদের মতো। লেখনখানি মিঠে লাগছে।
4. আকাশজুড়ে মেঘের কাঁদন গুরু গুরু
দেয়ার ডাকে।
উত্তর:
আকাশজুড়ে মেঘের কাঁদন। গুরু গুরু দেয়ার ডাকে।
5. লিখে গেছে গাঙশালিকে গাঙের পাড়ের মোড়ল হ'তে।
উত্তর:
গাঙশালিকে লিখে গেছে। গাঙের পাড়ের মোড়ল হতে।
3. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো:
1. কবি প্রকৃতির কোন, কোন্ প্রতিনিধির কাছ থেকে কেমন
সমস্ত চিঠি পেয়েছিলেন, বিশদে লেখো।
উত্তর:
কবি প্রকৃতির বিভিন্ন রূপের প্রতিনিধির কাছ
থেকেই নানাভাবে চিঠি পেয়েছিলেন। প্রথমত, লাল মোরগের কাছ থেকে
তিনি চিঠি পেয়েছিলেন। সে চিঠিতে ছিল ভোর-জাগানোর সুর। অর্থাৎ ঘুম ভাঙানোর আহ্বান।
তাতে ছিল মোরগের ডানার সোনালি রঙের মতো প্রভাত-সূর্যের পরশ। আবার চখাচখির পাঠানো
চিঠিতে ছিল বালুচরের ঝিকিমিকি। বর্ষা তার বিপুল ঢেউ-এর সম্ভার নিয়ে বালিতে অনেক কিছু
লিখেছিল। গাঙশালিকের চিঠিতে গাঙের পাড়ের মোড়ল হওয়ার কথা লেখা ছিল। সেইসঙ্গে উল্লেখ
ছিল জলধারার কলকল শব্দ ছাপিয়ে জোয়ারভাটাতে বারবার ফিরে আসার কথা।
বাবুই
পাখি যে-চিঠিটি পাঠিয়েছিল, তাতে ছিল তার শিল্পদক্ষতার পরিচয়। ধানপাতা আর
তালপাতার সমন্বয়ে বিচিত্র নকশা করে ভালোবাসা মাখানো সেই চিঠিটি কবিকে ভীষণভাবে
মুগ্ধ করে। অন্যদিকে, কোড়াকুড়ীর চিঠিতে ফুটে ওঠে গ্রামবাংলার
বর্ষাকালের বিচিত্র সৌন্দর্য। বর্ষার সময় ফসলের সবুজ পাতাগুলি মৃদুমন্দ বাতাসে
বিচিত্র নৃত্য ভঙ্গিমায় মাঠের কোল ভরিয়ে তোলে। আর মেঘেরা তাদের গুরু গুরু ডাকে
উদাস বাতাসকে ভারাক্রান্ত করে তোলে।
এর
সঙ্গে কবি খোকা ভাই-এর চিঠি পেয়েছেন। শীতের ভোরের রোদের মতো মিষ্টি সে-চিঠি। সুদূর
আকাশে নীল মেঘের কোলজুড়ে ঝাঁকেঝাঁকে পাখিরা বিচিত্র গতি-বিভঙ্গে উড়ে যায়, কখনও-বা লাফালাফি করে। খোকা ভাই-এর হাতের তুলনাহীন লেখায় সেই চিঠি গভীর
নির্জনে কবিকে আনন্দে ভরিয়ে তোলে।
2. খোকা ভাই-এর চিঠিটির প্রসঙ্গে কবি যে-সমস্ত উপমা ও তুলনাবাচক শব্দ ব্যবহার
করেছেন তাদের ব্যবহারের সার্থকতা বুঝিয়ে দাও।
উত্তর:
কবি জসীমউদ্দিন খোকা ভাই-এর চিঠিটির প্রসঙ্গে বিভিন্ন উপমা ও তুলনাবাচক শব্দ
ব্যবহার করেছেন। ব্যবহার করেছেন, 'আকাশের সুনীল পাতা'
'শীতের ভোরের রোদের মতো মিঠে' এবং 'খুশির নূপুরের ঝুমুর-ঝুমুর' শব্দের মতো উপমা ও
তুলনাবাচক শব্দ।
'শীতের ভোরের রোদের মতো মিঠে' শব্দবন্ধটি বিশ্লেষণ
করলে আমরা বুঝতে পারি- শীতের ভোরের রোদ যেমন সকলের কাছে কাঙ্ক্ষিত, তেমনই কবির কাছে সে-চিঠি পরম আকাঙ্ক্ষিত। মিষ্টির সুস্বাদ আমাদের রসনাকে
যেমন পরিতৃপ্ত করে, তেমনই রোদের অনুষঙ্গে 'মিঠে' শব্দটি ব্যবহার করায় শব্দটিতে
একটি
স্বাদের আরোপ হয়েছে। রোদ এখানে প্রাকৃতিক উপকরণমাত্র নয়, আকাশের অনুভব ও আস্বাদের বিষয় হয়ে ওঠে।
অন্যদিকে, আকাশকে 'সুনীল পাতার' সঙ্গে
তুলনা করায় সেখানে ফুটে উঠেছে আকাশের মহিমা এবং আকৃতিগত একটি আবহ। একইসঙ্গে সেই
বিস্তৃত পরিসরে পাখিরা মনের আনন্দে ডিগবাজি খায়, গড়াগড়ি যায়।
সর্বোপরি, 'খুশির নূপুর'-এর ঝুমুর-
ঝামুর শব্দ বাজার অনুষঙ্গে কবির সরল মনের অভিব্যক্তি ফুটে উঠেছে। কবিতার নাম
যেহেতু 'চিঠি', সেক্ষেত্রে এই উপমা ও
তুলনাবাচক শব্দগুলি প্রিয় মানুষদের সঙ্গ ও সান্নিধ্যের প্রতীক হয়ে উঠেছে। সেদিক
থেকে বিচার করলে এই শব্দগুলির ব্যবহার। কবিতাটিকে শিল্পসার্থক করে তুলেছে।
অতিরিক্ত
প্রশ্নোত্তর
3. সঠিক
উত্তরটি বেছে নাও:
1. চিঠি পেলুম লাল (মোরগের/ময়ূরের/মাছরাঙার) ভোর- জাগানোর সুর-ভরা।
উত্তর:
মোরগের |
2. ঢেউ-এ ঢেউ-এ (বর্ষা/শীত/গ্রীষ্ম) সেথা লিখে গেছে কত কী কী!
উত্তর:
বর্ষা |
3. (কলা/সবুজ/শুকনো) পাতার আসরগুলি নাচছে জল- ধারায় মেতে।
উত্তর:
সবুজ |
4. (উত্তাল/উদাস/মুক্ত) বাতাস আছড়ে বলে কে যেন বা চাইছে কাকে।
উত্তর:
উদাস |
5. দূর আকাশের (সুনীল/সবুজ/শাল) পাতায় পাখিরা সব ঝাঁকে ঝাঁকে ওড়ে।
উত্তর:
সুনীল |
4. একমুখী তথ্যসন্ধানী প্রশ্নোত্তর (দু-তিনটি বাক্যে উত্তর লেখো):
1. 'চিঠি' কবিতায় আকাশজুড়ে কার শব্দ এবং কোন্ ঋতুতে তা
শোনা যাচ্ছে?
উত্তর:
পল্লিকবি জসীমউদ্দিন-এর লেখা 'চিঠি' কবিতায় আকাশজুড়ে মেঘের গুরু গুরু শব্দ বর্ষা
ঋতুতে শোনা যাচ্ছে।
2. 'চিঠি' কবিতাতে কবি কোন্ কোন্ পাখির কথা বলেছেন?
উত্তর:
'চিঠি' কবিতায় কবি
জসীমউদ্দিন যে-সকল পাখির নাম করেছেন, সেগুলি হল-মোরগ,
চখাচখি, গাঙশালিক, বাবুই
ও কোড়াকুড়ী পাখি।
3.
"ইহার সাথে পেলুম আজি..." -'ইহার
সাথে' বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর:
'ইহার সাথে' বলতে কবি লাল
মোরগ, চখাচখি, বাবুইপাখি এবং কোড়াকুড়ীর
চিঠির কথা বলেছেন।
4.
"ইহার সাথে পেলুম আজি" -কবি কী পেলেন?
উত্তর:
কবি তাঁর খোকা ভাই-এর থেকে একটি চিঠি পেলেন।
5.
"ইহার সাথে পেলুম আজি খোকা ভাই-এর একটি চিঠি।" -সে চিঠিটি
কেমন?
উত্তর:
খোকা ভাই-এর পাঠানো চিঠিটি কবির কাছে শীতের
ভোরের মিষ্টি রোদের মতো।
5. শূন্যস্থান পূরণ করো:
1. লিখে গেছে গাঙশালিকে ______ পাড়ের ______ হতে।
উত্তর:
গাঙের, মোড়ল।
2. ধানের _______ তালের ______ বুনট-করা নকশা এঁকে।
উত্তর:
পাতায়, পাতায়।
3. আকাশ জুড়ে _____ কাঁদন গুরু গুরু ডাকে।
উত্তর:
মেঘের, দেয়ার।
4. শীতের ভোরের ______ মতো লেখনখানি লাগছে ______ |
উত্তর:
রোদের, মিঠে।
5. খুশির ______ ঝুমুর-ঝামুর বাজছে আমার।
উত্তর:
নূপুর, নিরালাতে।
Editing By:- Lipi Medhi